কেন কিন্নর রায়ের আখ্যান নিয়ে লিখতে চেয়েছি
সাথী নন্দী
গবেষক, বাংলাবিভাগ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়
তিনি কিন্নর রায়। অনুল্লেখের এক রাজনীতিতে যেখানে এই লেখকের নাম অনুচ্চারণ করাটাই অলিখিত নিয়ম, সেখানে নবীন গবেষক সাথী নন্দী শুধু তাকে নিয়ে গবেষণাই করলেন না, উপরন্তু একটি বই লিখে ফেললেন, 'কিন্নর রায়ের সাহিত্য জীবন ও সাহিত্য ভুবন'। সাইন্যাপস্ পত্রিকার পক্ষ থেকে আমরা এই নবীন গবেষকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম এই ব্যতিক্রমি কাজটা তিনি কেন করলেন। কেন তার মনে হল এই লেখককে নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। তারই ফলশ্রুতি এই লেখা। সময়ের বুকে এই স্বীকারোক্তিটি একটি দলিল হয়ে থাকবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। একই সঙ্গে আমরা, যারা কিন্নর রায়কে কয়েক দশক ধরে পাঠ করে আসছি, তারা লক্ষ্য করব নতুন প্রজন্মেও তার লেখার প্রভাব কীভাবে অব্যাহত আছে। তাকে নিয়ে এই গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ সেই প্রভাবের অস্তিত্বকেই সুপ্রতিষ্ঠিত করে।
আমরা জানি
সত্তর দশকের অন্যতম প্রধান কথাকার কিন্নর রায়। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে বহুবার
এসেছেন নানা আলোচনাসভায়। ২০১৮ সালে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে
নিয়ে তিনি বক্তৃতা রাখার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন এবং সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম। তাঁর সেই বক্তৃতাটা আমি খুব মন দিয়ে শুনেছিলাম, একদম অন্যরকম ভাষায়
তিনি কথা বলেন। তাঁর বলার ধরণ এবং কণ্ঠস্বর আমাকে
খুবই আকৃষ্ট করেছিল। আমার মনে হয়েছে তাঁর ভাষার যে নির্মাণ
বা ভাষার যে স্থাপত্য — এই পুরো ব্যাপারটা অন্যদের থেকে একেবারে স্বতন্ত্র। সেই কারণেই বক্তৃতা শোনার পর আমি কিন্নর রায়ের বিভিন্ন ধরণের
বই সংগ্রহ করতে আরম্ভ করি এবং পড়তে থাকি। সেই বইয়ের তালিকায়
তাঁর উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য সবই ছিল। তাঁর নির্মিত সাহিত্য
পড়তে পড়তে আমার মনের মধ্যে অনেক জিজ্ঞাসা জন্মাতে থাকে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অনুষ্ঠিত
আন্তর্জাতিক আলোচনাসভায় তিনি বিশেষ অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছিলেন এবং প্রায় তিনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের
অতিথিনিবাসে ছিলেন। সৌভাগ্যবশত সেই আলোচনাসভায় আমি সঞ্চালকের
ভূমিকা পালন করেছি, সেখানেই কিন্নর রায়ের সঙ্গে প্রথমবার আমার পরিচয় হয়। এতদিন ধরে আমার মনে যে বিবিধ প্রশ্ন জন্মেছিল, সেই বিপুল প্রশ্নমালা
বা মনের গভীরে উত্থাপিত জিজ্ঞাসা নিয়ে আমি অতিথি নিবাসে কিন্নর রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ
করার চেষ্টা করেছি। তিনি অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে আমার সমস্ত
প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। আমি তাঁর সঙ্গে ফোনে
নিয়মিত যোগাযোগ রাখারও চেষ্টা করেছি এবং তাঁর রচিত গ্রন্থগুলো আবার নতুন করে পড়া, নতুন করে ভাবা, নতুন পাঠের পর আবার
তাকে নতুন করে পড়েছি।
এই লেখকের আখ্যান পাঠ করতে করতে আমি বুঝতে পারি এই অক্ষরকর্মী আসলে অন্যরকম। তিনি মহাকালের কফিনের পায়ে পেরেক ঠুকে দিতে চান। তিনি জীবনচর্চায় যা করছেন তারই প্রতিফলন ফুটে উঠেছে তাঁর
লেখনীতে। তাঁর জীবন ও তাঁর সৃষ্ট আখ্যান জড়িয়ে
গেছে সম্পূর্ণত এক সাহিত্য পরিমণ্ডলে। তিনি নিজের মতো করে
একটা অন্য ভুবন নির্মাণের চেষ্টা করেন ও সেই ভুবনের কথা বলার প্রয়াস নেন-- যে ভুবনটি আমাদের
চেনা আবার কিছুটা অচেনাও। এই চেনা-অচেনা ভুবনকে তিনি যেভাবে আবিষ্কার
করে পাঠককে দেখাতে চেয়েছেন, সেটাকে অনুসরণ করে আমি এই লেখকের সর্বপরিসরের লেখালিখিকে
বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি আমার গ্রন্থে। আমি কতটুকু ভালো
কাজ করতে পেরেছি জানিনা তবে কিন্নর রায়ের মতে এটা নাকি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ
হয়েছে।
আমি একজন লেখকের জার্নিকে জানার চেষ্টা করেছি। একজন লেখক তো আসলে যাত্রা করেন, তাঁর একটা দীর্ঘ যাত্রাপথ রয়েছে। এই যাত্রাপথকে আমার মতো করে খুব বিস্তৃত হয়তো নয় কিন্তু একটা
রূপরেখা দেওয়ার চেষ্টা করেছি যাতে কিন্নর রায়কে নিয়ে ভবিষ্যতে যারা কাজ করবেন তারা
যেন অন্তত এই বইটি ধরে এগোতে পারেন। বাংলা ভাষায় কিন্নর
রায়কে নিয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন অনেকেই, যেমন— সমালোচক সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থপ্রতীম বন্দ্যোপাধ্যায়, সুমিতা চক্রবর্তী, রবীন পাল, রণজিৎ অধিকারি সহ
আরও অনেকেই আছেন যারা কিন্নর রায়ের সাহিত্য বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমার বারবার মনে হয়েছে এঁরা যেভাবে আলোচনা করেছেন তার বাইরে বেরিয়ে আমাকে কিছু বলতে হবে। আমি শুধু কোটেশন সর্বস্ব হবো না, আমি শুধু বলব না যে উনি এই বলেছেন
বা তিনি ওভাবে বলেছেন, আর সেকারণেই কিন্তু আমি লেখকের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি একজন লেখক মারা যাবার পর তাঁকে মূল্যায়ন করা
নিশ্চয়ই জরুরী কিন্তু কোনো লেখক জীবন্ত থাকতে থাকতে এবং তিনি সৃষ্টিশীল ও কর্মশীল থাকতে
থাকতে যদি তাঁর লেখা বইপত্র নিয়ে আলোচনা হয় তাহলে হয়তো লেখক নিজেও কিছুটা বুস্টার হন। পাঠকরাও নতুন করে সেই লেখকের বই সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কারণ পাঠকরা তো সবার সম্পর্কে জানেন না, তাদের পক্ষে সম্ভব
হয়ে ওঠে না প্রত্যেক লেখকের বই সংগ্রহ করে পড়া, কিন্তু কোনো একটা জায়গায় যদি তারা
যেকোনো লেখক সম্পর্কে আলোচনাটা পেয়ে যান তাহলে হয়তো সেই লেখক সম্পর্কে নতুন করে তারা
উৎসাহী হয়ে উঠবেন।
কিন্নর রায় মূলত
লিটল ম্যাগাজিনের লেখক, লিটল ম্যাগাজিনের লেখকদের প্রতি আমার অসম্ভব পরিমাণ শ্রদ্ধা
রয়েছে। কিন্নর রায় একজন লড়াকু মানুষ। রাজনৈতিক জীবনে তিনি যেমন লড়াই করেছেন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে
তেমনি তথাকথিত সাহিত্যের যে প্রাতিষ্ঠানিকতা, তার বিরুদ্ধেও লড়াই করেছেন অবিরত। যতদূর জেনেছি তাঁর প্রজন্মে তিনি এমন এক লেখক যিনি পশ্চিমবঙ্গের
সবচাইতে বড় যে লেখার কাগজ রয়েছে সেই কাগজে লেখার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই প্রত্যাখ্যানের একটা ভাষা তিনি তৈরি করতে পেরেছেন তাঁর
লেখায়। ফলে ব্যক্তিজীবনে তিনি যেমন দৃঢ়, সাহিত্য জীবনেও তিনি
দৃঢ়। তাঁর লেখা যে অন্যরকম হবে এ বিষয়ে
কোনো সন্দেহই নেই।
কিন্নর রায়ের লেখালিখির শুরু মূলত সাতাত্তর সালে জেল থেকে বেরোনোর পর। জেল থেকে বেরিয়ে
তাঁর মনে হয়েছে যে পৃথিবী আরও বৃহৎ এবং ব্যাপক-- এই সমগ্রতাকে জানার নেশায় তিনি প্রচুর
বই পড়েছেন ও ভারতবর্ষের গ্রামে গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। এই ঘুরে বেড়ানোর ফলেই তিনি দেশের মানুষ, দেশের ধূলি ও দেশের
কষ্টকে অনুভব করতে পেরেছেন। তাঁর মনে হয়েছে যদি
আমরা আমাদের দেশকে ঠিকমতো জানতে পারি, যদি স্বদেশ চেতনার কথা সঠিকভাবে বলতে পারি তাহলে কোনো না
কোনো একদিন একটা প্রত্যয় তৈরি হবে মানুষের মধ্যে। যে প্রত্যয় নিয়ে ভবিষ্যতে মানুষ এগোবেন স্বপ্ন ও কল্পনার
মধ্যে-- যেখানে গড়ে উঠবে একটা সুস্থ সাম্যবাদী সমাজ। যে সমাজে রাজনৈতিক এজেণ্ডা থাকার চেয়েও মানুষের এজেণ্ডাটাই
বড় হয়ে থাকবে।
সত্তর সালে দেশকে জানার যে কৌতূহল তাঁর মধ্যে ছিল সেই কৌতূহলটাই একটু অন্যরকম
ভাবে তাঁকে লেখালেখির মধ্যে নিয়ে আসে। তিনি দেশ এবং দেশের মানুষের
কথা বলার চেষ্টা করেন। ভারতবর্ষের বিভিন্ন কোণে তিনি ঘুরে
বেড়িয়েছেন একজন পরিব্রাজকের মতো কিন্তু ঘুরলেই তো শুধু হবে না বা ঘুরে বেড়ানোর মধ্য
থেকে যে অভিজ্ঞতা উঠে আসছে তাকে যদি সাহিত্য রসে সিঞ্চিত না করে পরিবেশন করা হয় সেটা
নেহাতই খবরের কাগজের কেজো রিপোর্টাজ হয়ে দাঁড়াবে। যদিও জীবন ধারণের জন্য তাঁকে সাংবাদিকতা করতে হয়েছে বহু বছর-- যুগান্তর পত্রিকা, দৈনিক বসুমতী পত্রিকা, প্রতিক্ষণ ও মহানগর
পত্রিকাতেও তিনি সাংবাদিকতা করেছেন কিন্তু তাঁর গদ্য কখনো সাংবাদিক সুলভ হয়ে ওঠেনি। গদ্যের মধ্যে একটা অন্য রস, অন্য জীবন কথা তিনি পরিবেশন করেছেন
সুচারু ভাবে। লেখার মেজাজে তিনি যেমন আলাদা, জীবন যাপনের মেজাজেও
তাঁর স্বাতন্ত্র্য চোখে পরে। এখনো তাঁর কৌতূহল
প্রচুর, জীবন যাপন করতে করতে বাঁচার ইচ্ছে অনেক যদিও মৃত্যুবোধ তাঁর লেখার অন্যতম বিষয়
এবং তিনি মনে করেন মৃত্যু ছোটবেলা বেলা থেকেই তাঁর সঙ্গে সঙ্গে হাঁটছে। তবুও জীবন ও আহ্লাদে তিনি সমান উৎসাহী, তাইতো নারীর বিহঙ্গ, শিশুর হাসি, প্রকৃতির সৌন্দর্য, নিসর্গ, অরণ্য, পাখপাখালি, জীবজন্তু এসবই তাঁকে
আজও নানাভাবে মুগ্ধ করে রাখে। সেই মুগ্ধতাটুকুই
হচ্ছে তাঁর বাঁচার রসদ, লেখার রসদও বটে।
![]() |
কিন্নর রায় |
একজন লেখকের একটা
খোঁজ থাকে, একটা সার্বিক অভিযান থাকে-- কিন্নর রায়ের লেখায় সর্বক্ষণই দেখতে পাই তিনি কিছু না কিছু
খুঁজে চলেছেন, সেই অন্বেষণ বা জিজ্ঞাসাই তাঁকে অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র করেছে। যেমন কিন্নর রায়ের ‘প্রকৃতি পাঠ’ উপন্যাস পড়ার পর
বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক এবং গ্রন্থকার সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৯১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আনন্দবাজার
পত্রিকায় লিখেছিলেন-- ‘কিন্নর রায়ের ‘প্রকৃতিপাঠ’ অন্যধরনের উপন্যাস। পরিবেশ দূষণকে নিয়ে কেউ এর আগে উপন্যাস লিখেছেন কিনা আমি
জানিনা। অরণ্য-পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে একটা প্রতিবাদ
জানিয়েছিলেন বিভূতিভূষণ-- সে অনেক দিন হয়ে গেল, তিনি যখন সে কাহিনি লিখেছিলেন তখন
সে প্রতিবাদ উচ্চারিত হয়েছে শুধু সৌন্দর্য ও শান্তির দিকে তাকিয়ে। মানবীয় অস্তিত্বের বিপন্নতার দিকে লক্ষ রেখে বিষয়টির উপন্যাসগত
উত্থাপন প্রথম পাওয়া গেল ‘প্রকৃতি পাঠ’ উপন্যাসে। কিন্তু শুধুমাত্র
সেজন্যই উপন্যাসটি উপন্যাস হয়ে উঠতে পারে না তাকে উপন্যাস হয়ে উঠতে হবে উপন্যাসের নিয়মে। সুখের কথা উপন্যাসটি
তা হয়েছে ... বইটিতে স্বাভাবিক ভাবে বাদ পরে গেছে ন্যূনতম যৌন প্রসঙ্গ। আশ্চর্য বলিষ্ঠতা পেয়েছে অন্য ইন্দ্রিয়ের সজাগ রসগ্রাহিতা।’ আসলে কিন্নর রায়ের কাছে যেকোনো লেখাই হল একটা সাহিত্য অভিযান
সেজন্য তিনি বড় কাগজে যেভাবে লেখেন একটি ছোট কাগজেও ঠিক একইভাবে লেখেন, তার মধ্যে কোনো ফারাক
নেই এবং সবটাই লেখেন একটি নির্দিষ্ট মায়াযাপনে। এই মায়াযাপনের খেলাই তিনি করে চলেছেন।
কিন্নর রায়ের লেখা পাঠ করতে করতে এটুকু বুঝেছি, এই লেখক অনেকটা পুনর্নবা শাকের মতো যে শাকের কোনদিন মৃত্যু হয় না বা দূর্বা ঘাসের মতো যা একটু জল পেলেই মুহূর্তের মধ্যে জেগে ওঠে আর তারপর সবুজে ছেয়ে যায়-- এই বাঁচাটাই হচ্ছে মানুষের পুনরুত্থান। কিন্নর রায় নানা ঐতিহাসিক চেতনা বা দার্শনিক বোধ যেমন কেন জীবন? কেন মৃত্যু? কেন নারী? কেন ভালোবাসা? কেন বেঁচে থাকা? প্রভৃতি প্রশ্নগুলো করতে করতে তাঁর সামাজিক সচেতন মন নিয়ে এগোতে থাকেন সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এক অনুভবের জগতে। তাঁর ‘ধর্ম সংকট’ গল্পগ্রন্থের সমস্ত গল্প এই আলোচনার কথা বলে।
আমি ‘কিন্নর রায়ের সাহিত্য জীবন ও সাহিত্য ভুবন’ গ্রন্থের এগারোটি অধ্যায়ে লেখকের সামগ্রিকতাকে একটি ধারাবাহিক
অনুসরণের মধ্য দিয়ে পুরোপুরি না হলেও অন্তত কিছুটা পাঠকের সামনে মেলে ধরার চেষ্টা করেছি। একজন লেখকের সৃষ্টিকে পুরোটা জানা খুব কঠিন। কিন্তু কিন্নর রায়ের লেখালিখির পথকে অনুসরণ করে আমি বুঝতে
পেরেছি এই লেখকের জীবন যেমন বিচিত্রগামী তেমনি লেখাও ততোধিক বিচিত্রমুখী এবং নানা বিষয়কে
ছুঁয়ে এই লেখক বাঁচেন তাঁর আখ্যানকলায়। একজন মানুষ সারাজীবন
ধরে লেখেন, লিখতে লিখতে লেখকের মৃত্যু হয় কিন্তু লেখা থেকে যায় এবং সেই লেখকের লেখাই থাকে
যিনি চিরজীবী হওয়ার সাহস নিয়ে জ্যোৎস্নার কেশরে হাত রাখেন। এই জ্যোৎস্নার কেশরে হাত রাখাটা একজন সাহসী লেখকের অন্যতম
কর্তব্য বলে আমার মনে হয়। কিন্নর রায়কে পড়তে পড়তে আমার মনে হয়েছে
এই লেখক শুধুমাত্র জ্যোৎস্নার কেশরেই হাত রাখেননি, তিনি আগুনের ডালপালা এবং বিষের নদীকেও
অতিক্রম করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর এই যাত্রাপথকে
খানিকটা হলেও সমর্থন ও শুশ্রূষা দেওয়ার জন্য আমার এই গ্রন্থের আয়োজন। এগারোটি অধ্যায়ে কিন্নর রায়ের লেখালিখি ও জীবন-যাপনকে যথাসম্ভব
অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি এবং আমি আমার সাধ্যমত তাদের তুলে ধরেছি নিজস্ব ভূমিকায়, নিজস্ব আঙ্গিকে।
![]() |
সাথী নন্দী।। ছবি ফেসবুক |
0 মন্তব্যসমূহ