সম্পাদকীয়।। বর্ষ ২৩, সংখ্যা ৩৩।। ওয়েব  সংখ্যা ৩।।

ব্যবহৃত গ্রাফিত্তিটি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরের

২০২০ সালে যখন গোটা বিশ্বের সাথে কলকাতাও করোনার জ্বরে জর্জরিত ঠিক তখনই সোশাল মিডিয়ায় বেসরকারি হাসপাতালের একজন নার্সের এক সদ্যজাতকে স্তন্যদানের ছবি ও খবর ভাইরাল হয়েছিল। 

 গোটা বিশ্ব যখন করোনার ভয়ে প্রিয়জনেদের সঙ্গও ত্যাগ করছে ঠিক তখনই সেই নার্সটি এক সদ্যজাত শিশুকে স্তন্যদুগ্ধ পান করিয়ে জীবন দান করছেন, এই খবর আশাকরি অনেকেই শেয়ার করেছেন জনসচেতনতার নজীর হিসেবে। 

    বিস্ময়ের কথা এর ঠিক দু'শো বছর আগে ১৮২০ সালে আধুনিক নার্সিং সেবার অন্যতম প্রতিভূ ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্ম ইটালিতে। বিষ্ময় বলা হচ্ছে এই কারণে, নাইটিঙ্গেল যে মতাদর্শে যে আধুনিক ভাবনায় সেবিকাদের জন্য নিজের জীবন নিয়োজিত রেখেছিলেন সেই ভাবনার বিচ্যুতি দু'শো বছরেও ঘটেনি এটা ভেবে। 


১৮৫৯ সালে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের লেখা বইয়ের সাম্প্রতিক মুদ্রণ

    রোগীর জন্য একজন ডাক্তারের পরামর্শের চেয়ে কোনো অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয় নার্সের সেবা। শুধু তাই নয়, করোনা ভাইরাস মহামারী দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত পৃথিবীতে নার্সরা ফ্রন্টলাইনের কর্মীদের সারিতে দন্ডায়মান। বিশ্বকে সুস্বাস্থ্য দেবার জন্য এবং অন্যের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা সহজ কাজ নয়। 

নার্স বা সেবিকাদের কাজের গুরুত্বের দিক বিচার করে দ্য লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প খ্যাত ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন ১২ ই মে দিনটি ১৯৭৪ সাল থেকে সেবিকা দিবস হিসেবে পালিত হয় গোটা বিশ্বে। ১৮৫৩ র অক্টোবর থেকে ১৮৫৬ র ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চলা ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় নাইটিঙ্গেলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই যুদ্ধে তিনি অসুস্থ সৈন্যদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ফ্লোরেন্স এই যুদ্ধে কেবল আহত সৈন্যদের যত্ন নিয়েছিলেন তাই নয় স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও এক বিশাল পরিবর্তন এনেছিলেন। এই বছর এই দিনটির প্রতিপাদ্য বিষয় হল, 'নার্স ইজ আ ভয়েস টু লিড - নার্সিং ইজ দ্য ওয়ার্ল্ড টু হেলথ।'

উড়িষ্যার প্রখ্যাত বালির ভাস্কর্য শিল্পী সুদর্শন পট্টনায়েকের
নার্সদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত এই ভাস্কর্যটি তিনি তার টুইটারে প্রকাশ করেছিলেন
এবারের আন্তর্জাতিক সেবিকা দিবসে

    বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আমরা টিভি, রেডিও থেকে শুরু করে ফেসবুক, ইউ টিউবে ডাক্তারদের নানা পরামর্শ শুনেছি। অথচ সেভাবে সেবিকারা কোথাও যেন উপেক্ষিত থেকে গেছেন 'মিডিয়া'র কাছে। সাইন্যাপস্‌ পত্রিকা এই সেবিকাদের কথা জানতে চেয়েছিল। তারা কী ভাবছেন, তারা কী বলতে চাইছেন। ফ্রন্টলাইন কর্মী হিসাবে তাদের কী অনুভব। এই প্রতিক্রিয়া যেমন দিয়েছেন অভিজ্ঞ কোনো সেবিকা, তেমনি সদ্য কাজে যোগ দেওয়া সেবিকা বা যারা এখন সেবিকাব্রতে যুক্ত হবার জন্য অধ্যয়নরত তারাও জানিয়েছে তাদের কথা।  আন্তর্জাতিক সেবিকা দিবস উপলক্ষে সাইন্যাপস্‌ পত্রিকার পক্ষ থেকে সমস্ত সেবিকাদের জন্য রইল আপামর জনসাধারণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন।🚫

আপনার মতামত নিচে 
'আপনার মন্তব্য লিখুন' শীর্ষক বক্সে লিখে 
আমাদের জানান। 
লিটল ম্যাগাজিন বেঁচে থাকে 
পাঠকদের মতামতে। 🙏