সাইন্যাপস্‌ সংবাদ ।।  
তারাশঙ্কর স্মৃতি সাহিত্যসমাজ কর্তৃক পরিচালিত একটি বর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান।। ১৭/১/২০২১ 
প্রতিবেদন।। শ্রীকান্ত অধিকারী


     বীরভূম জেলা সিউড়ি শহরে লিজ ক্লাবের শতবার্ষিকী কক্ষে অনুষ্ঠিত হলো তারাশঙ্কর স্মৃতি সাহিত্য সমাজ কর্তৃক বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান।  পরিকল্পনা মত সকাল ১০ টা থেকে ৪.৩০ অবধি অত্যন্ত সুচারুভাবে এবং পরিকল্পনামতো অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো। 

    অনুষ্ঠানটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। দশটা থেকে একটা অব্দি দ্বিপ্রাহরিক আহারাদি এবং দুটো থেকে সাড়ে চারটার দিকে সাহিত্য-সংস্কৃতি দিক অর্থাৎ প্রথম অংশে বাংলা সাহিত্যের মহান সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তার লেখনি তার রচনা এবং তার পরিবারের কিছু অজানা কথা আমরা আলোচনা চক্রে জানতে পারলাম। 
    
    তারাশঙ্কর সাহিত্য সমাজ সম্পাদক মাননীয় দেবাশিস মুখোপাধ্যায় মহাশয় তার বক্তব্য রাখেন তারাশংকর বাবুর কথা সাহিত্য নিয়ে আগামী প্রজন্ম কি করছে বা কতদূর করতে পারে বা আদৌ তো সেটা হচ্ছে কিনা এ নিয়ে বিশদে বলেন। সিউড়ি শহরে একমাত্র তিনিই তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়েই কাজ করে চলেছেন। ইতিমধ্যেই তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নানা আলোচনা মূলক পুস্তক রচনা করেছেন এবং ইতিমধ্যে তিনি একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেছেন, যাতে করে সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ে আগামী প্রজন্ম কাজ করতে পারেন। 
    
    আমরা যারা উপস্থিত ছিলাম আমাদের কাছে উপরি পাওনা হিসেবে পেয়েছিলাম সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌত্র অধ্যাপক শ্রী অমল শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অধ্যাপক প্রপৌত্র অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাদের বক্তব্য তাদের অনুভূতির কথা অজানা তারাশঙ্কর সম্বন্ধে পারিবারিক অনুভূতির কথা বিভিন্ন ঘটনা, ঘটনাবহুল জীবন, টালা পার্কের জীবনযাত্রা, তাদের মামাবাড়ি এবং নিজেদের বাড়ি, একসঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ বছর থাকা সমস্ত অনুভূতির কথা সুচারুভাবে সুন্দরভাবে আমাদের কাছে তিনি পরিবেশন করেন। আমরা অভিভূত হয়ে তাদের কথা  শুনছিলাম।



     তারাশঙ্কর স্মৃতি সাহিত্য সমাজ থেকে সম্মানিত করা হয় নাট্যকার অভিনেতা লাভপুর নিবাসী শ্রী সুমিত মিশ্র মহাশয়কে। তিনি অবলীলায় তার নাট্য ভঙ্গিমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে কবি, আরোগ্য নিকেতন এর বিভিন্ন অংশ পাঠ করে এবং অভিনয় করে শোনান। 

    পরবর্তীকালে দ্বিপ্রাহরিক আহারের পরে গল্প পাঠের আসর এবং কবিতা পাঠের আসর হয়। সেখানে  জেলার যারা গল্প লিখছেন, কবিতা লিখছেন তারা তাদের স্বরচিত সাহিত্য সৃষ্টি তুলে ধরেন আমাদের সামনে। পরিশেষে বলি এক অভূতপূর্ব সাহিত্য  আলোচনা সারাদিন ধরে হয়েছিল এবং প্রায়ই কমবেশি ১০০ জন সাহিত্যপ্রেমী তার স্বাদ নিয়েছিলেন। 

    'অরণ্য-অগ্নি'নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশিত হয়। খুব সুন্দর সম্পাদনার কাজ। স্বাভাবিকভাবেই দেবাশিসবাবু করেছেন। সেখানে বিভিন্ন প্রবন্ধ সাহিত্য তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে রচিত হয়েছে। আমাদেরকে তিনি একটি উন্নত মানের সাহিত্য পত্রিকা তুলে দিয়েছেন। ধন্যবাদ জানাই সাধারণ সাহিত্য অনুরাগী হিসেবে তার সহকর্মী হিসেবে। 


    পরিশেষে বলি এখানে সভাপতি মহাশয় বলেছিলেন তারাশঙ্কর হারিয়ে গেছে, আমরা যারা সাহিত্য করি আপামর বাঙালি ভাষা দিবসের প্রাক্কালে এসে আমরা অঙ্গিকার করতেই পারি বাংলা সাহিত্যের যে  প্রবাহ বিদ্যাসাগরের হাত ধরে এসেছে, বিদ্যাসাগর মাইকেল মধুসূদন দত্ত রবীন্দ্রনাথের প্রবাহ চলেছে তারপর তিন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রথিতযশা কবিদের বিভিন্ন ধারার কবিতার ডিঙি বেয়ে  বলতে পারি বাংলা সাহিত্যে কিন্তু থেমে থাকেনি। এগিয়ে গেছে তার ডালপালা নিয়ে। নানাভাবে নানা অংশমুখে ছড়িয়ে গেছে তারাশঙ্করকে মনে রেখেই তারাশঙ্করের সাহিত্য  মনে রেখেই আমরা এগিয়ে যাব বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে সৃষ্টি নিয়ে ভাবনা নিয়ে। 🚫