(এক)
লোচন দাস ভাইস্যা গেল।
কেমনে?
নদীর পাড় ভাঙিয়া।
হায়রে হায়রে হায় ...
কোন নদী? বরাক না মধুরা?
নদীর নাম দিয়া কিতা করতায়?
কেনে বা কেনে?
সব নদীই সমুদ্রত গিয়ে মিলছে।
তে লোচন দাস সমুদ্রত গেসে?
অয়। ভাসিয়া ভাসিয়া কত জনপদ দেখিয়া দেখিয়া গেসে।
বাংলাদেশেও গেসে গিয়া।
অয়।
বরাক থাকিয়া কুশিয়ারাত পড়সে। কুশিয়ারা দিয়া
বাংলাদেশ।
পদ্মা পাইব নি?
পাইব। পাইব।
আমার বাপে পদ্মাত কত নাউ বাইসন মাছ ধরছইন।
ইলিশ মাছ নি?
অয়।
অখনও মুখে লাগি রইসে।
ভালা। ভালা।
(দুই)
সাদা থান পরে এখন মাটির
দাওয়ায় বসে আছে লোচন দাসের বউ পুষ্পলতা। সামনে দরজার ভেতর এতক্ষণ কুপি বাতিটা
জ্বলছিল এখন তেল বিনে বোধহয় নিভে গেল। নিভুক। আর কত জ্বলবে? সেই সন্ধে থেকে তো জ্বলছে। ঘরের ভেতর গাদাগাদি করে ছয়টা সন্তান ঘুমোচ্ছে।
পেটে আরেকটা ঘুরে বেড়াচ্ছে। বড়টা কাশল। আজ ক'দিন থেকেই
ছেলেটা ভীষণ কাশছে। কাশতে কাশতে মনে হয় ওর দম বন্ধ হয়ে আসে। খোকন ডাক্তারকে দেখিয়ে
ওষুধ এনেছিল। খোকনই দিয়েছিল দেড়শো টাকার ওষুধ। পঞ্চাশ টাকা এখনও বাকি। কিন্তু কোনও
কাজ দিল না। কাশতে কাশতে একসময় মনে হয় এই বুঝি ছেলেটার প্রাণটা বেরিয়ে যাচ্ছে।
সরলামাসি বলেছিল রসুন তেল গরম করিয়া বুকে পিঠে মালিশ দিস, কমি
যাইব। জবার মা বলেছিল তুলসি পাতার রস মধু দিয়া খাইয়াইস একদম কমি যাইব। রত্না
বলেছিল — বাশক পাতার রস। তবে সমীরণের মা বলেছে এমনে কমত নাই। ওঝা দেখা। দুধপাতিলও
এক ওঝা থাকে। জল পড়া দেয়। আমি লইয়া যাইমুনে। সবকিছুই সবার কথামতো একটু আধটু করেছে
পুষ্পলতা কিন্তু ওঝার কাছে আর যাওয়া হয়নি।
একটা পেঁচা ডাকছে।
বিড়ালের মতো। গত বছর একটা পেঁচা ঢুকেছিল ঘরে। ঘরে তো একটাও জানালা নেই। কী করে
ঢুকল কে জানে। চাটাইয়ের বেড়াকে তো পুষ্পলতা গোবর দিয়ে লেপে দিয়েছে। পেঁচা দেখে ছ'টা বাচ্চার হল্লা চিৎকারে বস্তির অনেক লোকজন জড়ো হয়ে গেছিল। কেউ কেউ বলল
সিঁদুর পরিয়ে দাও আয় বরকত হবে। কিন্তু বেশিরভাগ লোকই বলল পেঁচা ঢোকা ভাল না। অশুভ।
তাই পুষ্পলতাকে বিষ্ণুপূজা দিতে হল সবার কথায় ধার কর্জ করে।
এখন পেঁচাটা আবার ডাকছে।
মা সুখদা থাকলে এখন হলুদ দিত চুলোয়। আর বলত মর। মর। মর। সেই মাও বরাকনদীতে মাছ ধরতে
ধরতে ডুবে মরল। সাঁতার জানা মা, জলদাসী
মা, কী করে মরল কে জানে। দু'দিন পর লাশ
মিলেছিল কুশিয়ারায় করিমগঞ্জের কাছে। পুষ্পলতাকে বলেছিল — মশলা বাটিয়া রাখ। মরিচ
বেশি করিয়া বাটিস। আমি মাছ লিয়া আইরাম। মশলা বেটে, উনুন
ধরিয়ে ঘর বাহির হচ্ছিল পুষ্পলতা। আহারে ভাবলে বুকটা এখনও কেমন করে। মনসা পূজাও করত
মা। তখন সারা মাস সুর করে পদ্মপুরাণ পড়া হত —
উজানের দুঃখ কথা করিব বর্ণন
রজনী প্রভাত হইল উদিত ভাস্কর
সভা করি বসিলেন রাজা মুক্তেশ্বর
নিত্য নিয়মিত কর্ম করে সর্বজন
যার যার কাজে রত রইল দাসীগণ
ভাল নৃত্য করে শাহের নন্দিনী
মনোহর বেশ ধরি নৃত্য করে সুন্দরী
(এগো) মোহিত হইয়া যত দেব পুরী নৃত্য করে
ও তার চরণে নেপুর ধ্বনি রুনু ঝুনু শব্দ তুলি
দেখ দাঁড়ায় কত অঙ্গ ভঙ্গি করি ...
ট্রেনের শব্দ। স্টেশনে ঢুকছে না বেরচ্ছে কে
জানে। গত বছর ট্রেনে করে করিমগঞ্জ গেছিল। করিমগঞ্জ থেকে লাতু বাংলাদেশ বর্ডারে
মামাশ্বশুরের বাড়ি। ওখানে গিয়ে অনেকদিন পর শেয়ালের ডাক শুনেছিল পুষ্পলতা। আহারে! প্রাণটা ভরে
গেছিল। এদিকে তো আজকাল শেয়াল প্রায় ডাকেই না। ডাকবে কী করে, থাকলে
তবে তো ডাকবে?
ওই যে উত্তম সিপানীদের বাড়ি পুষ্পলতা কাজ করতে
যায়। ওই রাস্তার বাঁকটা ঘুরলেই ওখানে একটা বিশাল পুকুর ছিল। আর পুকুরের পাড়ে কত
বিশাল বড় বড় গাছ জটলা করে ছিল। আর গাছগুলোতে কতরকম পাখিদের যে ঘর সংসারও ছিল। সারা
সময়ই ওদের ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ, জটলা, কিচির মিচির।
দুটো চিলও থাকত। ছাদের উপর কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে সবকিছুই দেখত পুষ্পলতা। শীতের
শুরুতে কত সাদা সাদা হাঁসও আসত। কিন্তু এই তো কয়েক মাস আগে পুকুরটা বুজিয়ে সব গাছ
কেটে ফেলা হল। এখন ওখানে বহুতল ফ্ল্যাট হচ্ছে। এখন ওদিকে আর তাকায় না পুষ্পলতা।
বুকটা কেমন হু হু করে। আহারে! পুকুরে থাকা ডাহুক পাখিটা
দেখেছে লোকে ধরার ধান্দায় আছে।
আরেকদিন দেখেছে একটা গাছের নীচে চুপ করে বসে
আছে পানকৌড়িটা। এদের ঘরবাড়ি কেড়ে নিল যারা ওদের কি পাপ হবে না? সুলতা দিদি
এসব নিয়ে খুব চিন্তা ভাবনা করে যদি ফেলা পুকুরগুলো সরকার কিনে নিয়ে সংস্কার করত।
আহারে সেথায় টলমল করত জল। পদ্ম ফুটত, শালুক ফুটত। কত পাখি,
কত প্রজাপতি সেথায় ঘুরে বেড়াত। আর ফেলা জমিগুলোও কিনে নিয়ে যদি গাছ
লাগাত। তাহলে পাখিরাও বাঁচত আর শহরের লোকেরাও সুস্থ বাতাস পেত! কী যেন একটা নাম
বলে দিদি বেশ কঠিন নাম এখন কিছুতেই মনে পড়ছে না। যাক্গে, কিন্তু
কোথায় সরকার এসব করবে শুধু লুটেপুটে খাবে। আর ভোটের সময় এসে হাত পাতবে। শহরের
রাস্তা দিয়েই তো হাঁটা যায় না। সেদিন তো বস্তির সমীরণ ফুটপাতের ম্যানহোলে ঢুকে
ভেঙে ফেলল পা। এখনও মেডিকেলে শুয়ে আছে। আবার ট্রেনের শব্দ সেই লাতু যাওয়া।
মামাশ্বশুরের মেয়ের বিয়ের অধিবাস সারা রাত জেগে ধামাইল —
ও ময়না বলিরে তুমায়
কী আনন্দ অইল আজিরে চম্পক নগরে
বউ বলে, “আমারে রোজ রোজ মারতে বেটা।
আমি মারতাম চিনি নানি?” বলে বউও দু'চার
ঘা বসিয়ে দেয়। লোটন তখন শান্ত হয়ে ভাত খায় না এমনি এমনি ঘুমিয়ে যায় কে জানে?
কিন্তু চেঁচামেচি বন্ধ হয়ে যায়।
ছেলেটা আবার কাশছে। না, এবার খোকন
ডাক্তর না ম্যাডিকেলে নিয়ে যেতে হবে। কষ্ট হয় ছেলেটার কাশি দেখলে। চার নম্বর
ছেলেটা তো কাশতে কাশতেই চোখ উল্টাল। বুকে কফ জমে গেছিল। নইলে এখন সাত সন্তানের
জননী হত পুষ্পলতা। কত কষ্টকে বহন করে পুষ্পলতা।
সেই যে অমিতবাবুর বাড়ি কাজ করতে দিয়েছিল মা।
বাড়ির সবাই ওকে ভালই বাসত। কিন্তু বাবুর বাপ সুযোগ পেলেই ওর সদ্য জেগে উঠা শরীরের
যেখানে সেখানে হাত দিত। রক্তাক্ত করত। বলত কাউকে বলবি না। নইলে মেরে ফেলব তোকে, তোর চোদ্দ
গুষ্টিকে। পুষ্পলতাও চুপ করে থাকত কিন্তু শরীরে বড় কষ্ট হত। হাঁটতে পারত না,
বসতে পারত না। তারপর একদিন পালিয়ে এল। মাকে বলেনি। ভয়ে। কী জানি যদি
সত্যিই মেরে ফেলে ওদের। মা চুল ধরে মেরেছিল — কেনে আইলে শয়তানের পুরি। আরেক বছর
থাকলে তো তোর বিয়ার টেকা জোগাড় হই গেল নে। অখন তোরে আমি কিতা খাওয়াইতাম। তারপর মা
কোনোরকম করে তৃতীয় পক্ষ লোচন দাসকে ঠিক করেছিল। প্রথম বউ ওর আগের প্রেমিকের সাথে
নাকি পালিয়ে গেছে। থানা পুলিশ করে ধরে এনেছিল লোচন দাস। কিন্তু বউটা কিছুতেই থাকল
না। দ্বিতীয় পক্ষ বাচ্চা হতে গিয়ে মরল। লোচন দাসের বয়স একটু বেশি। হোক। কী আর করা!
আর পুষ্পলতা তো তখন সদ্য কিশোরী। কত যুবক, কত কিশোর ওর
দিকে তখন ঘোরলাগা চোখে তাকায়। ওরও কাউকে কাউকে ভাল লাগে। ফিরে ফিরে তাকায়। একবার
বাবুর মায়ের সঙ্গে শিলকুড়ি বরমবাবার মেলায় গেছিল। কত সাধু-সাধুনী সেথায় গাঁজা
খাচ্ছিল। জিলিপি ভাজা হচ্ছিল। নিমকি খাজা, কত কী আহারে। আর
একটা বেলুনওয়ালা সদ্য কিশোর ওর দিকে তাকিয়েছিল আর ওরও চোখে তখন লেগেছিল ঘোর।
অনেকদিন ছেলেটাকে ভুলতে পারেনি পুষ্পলতা। বড় কষ্ট হত। কোথায় কোন স্বপ্নের গ্রামে
ওর ঘর আহারে! ভাবতে ভাবতে কাজে হত ভুল। বাবুর বউ তখন খ্যাঁক
খ্যাঁক করত — দিলে তো সর্বনাশ করিয়া। চউখর মাথা খাইয়া বইসস নি? সব কথাই তখন পুষ্পলতার মাথার উপর দিয়ে যেত।
ওদিকে "আমারে মারি লাইল। মারি লাইল।" বলে চেঁচিয়ে উঠল সুখদার বড় ছেলেটা। বাপের ফলের দোকান সামলাত। আজ ক'দিন থেকে ছেলেটা পাগল হয়ে গেছে। কেন পাগল হল কে জানে? কত জনায় কত কথা বলে। পুষ্পলতা এখন উঠোনে এসে দাঁড়াল। তারপর আকাশের দিকে তাকাল। চাঁদ আছে। এক দুটো ছিটফুট তারারাও। আর চারিদিকে মেঘেরা হাত ধরাধরি করে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
চরকপূজার দলটা এখন গান গেয়ে বাজনা বাজিয়ে
ফিরছে। শিব, দুর্গা, কালী, লক্ষ্মী,
সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ
সবাই আছে। লোচন দাসের ঘরটা নিজের। তাই ভাড়া দিতে হয় না। যদিও ভাঙা চোরা। একটা ঘরে
নিজেরা থাকে আর একটা ভাড়া দিয়েছিল মঞ্জুর মাকে। বড় ভাল ছিল এই বিধবা মঞ্জুর মা।
পুষ্পলতাকে যখন তখন সাহায্য করত। ওর সব সন্তানরাই প্রায় মঞ্জুর মায়ের হাতেই।
কিন্তু একজন ডিমওয়ালার সঙ্গে মঞ্জুর মায়ের সম্পর্ক হতেই বস্তির লোক এত মারল ধরে
আহারে! শেষে ওর ছেলে শনবিল ওকে নিয়ে গেল এই ক'দিন আগে। ঘরটা এখনও তাই খালিই আছে।
লোচন দাস ক'দিন থেকেই এন আর সি নিয়ে বিব্রত
ছিল। সেই যে বংশ বৃক্ষ। চিন্তায় সারা রাত তাই ঘুমোত না। আর ঘুম আসবে কী করে?
একবার ওকে ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে রেখেছিল দুইদিন। শেষে কী করে
ছাড়া পেল। অথচ ওর বাপেরা সেই ৬১তে এসেছে। ওরা হালুয়া দাস। শিলকুড়িতে বাগানের
রিক্যুজেশন করা জমি জায়গাও পেয়েছিল। বাপ কী করে জানি সব খোয়াল। আর যারা ৭১ এর পর
এসেছে। জমি জায়গা ব্যবসা করে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। কেউ কেউ দু'দিকেই
আসা যাওয়া করে এখনও। দুই দেশেই সম্পত্তি। এদের ধরল না। ধরল কিনা ঠেলাওয়ালা লোচন
দাসকে। ধুর। ধুর। মেঘগুলো এখন সরে যাচ্ছে। ওই যে চাঁদটা আবার লুকিয়ে গেল। আবার
কাশছে ছেলেটা। পুষ্পলতা এখন ছেলেটার গায়ে একটু হাত বুলিয়ে দিল। ঘুমা বাবা। ঘুমা।
সুখদার পাগলা ছেলেটা এখন গান ধরেছে —
তো যাও।
ছোট মেয়েটাও বলেছিল যাইও না বাবা।
তবু গেল লোচন দাস। আর পাড় ভেঙে ... সবার চোখের উপর দিয়ে ভেসে ভেসে গেল। জালটা হাতেই ধরা ছিল। ঘুরনি জাল। ওই জাল ফেলতে গিয়েই না।
আজ সবাই মিলে পুষ্পলতার হাতের শাঁখা ভেঙে চুড়ি
খুলে থান পরিয়ে দিল। লাশ যখন পাওয়াই গেল না নিশ্চয় বাংলাদেশে চলে গেছে লোচন দাস
ভেসে ভেসে ... এই নদীটাকে বড় ভালোবাসত লোচন দাস তাই এই নদী দিয়েই গেল। আহারে
ঠেলাটাও ওখনও উঠোনের কোণে রাখা আছে। লোচন দাসের ঠেলা। চারদিক অন্ধকারে ভরে গেল কেন
হঠাৎ। নদীটার দিকে তাকাল পুষ্পলতা। একী নদীটা উঠে আসছে কেন? পেটের
সন্তানটা নড়ে উঠল। ছেলেটা আবার কাশল। সাত সন্তানকে আঁকড়ে ধরে সাদা থান পরা
পুষ্পলতা এখন ওই নদী দিয়েই ভেসে যেতে লাগল ...
(তিন)
লোচন দাস ভাইস্যা গেল?
অয়। পুরা পরিবার লইয়া গেল।
নদীর পাড়ও ঘর। ঘর ভাঙিয়া ছয় সন্তান লইয়া বেটিও
গেল।
পেটও বুলে আরেকটা আসিল।
অয়।
হায়রে হায় হায় ...
এরারও লাশ পাইসে না।
না। না। সব বাংলাদেশ গেসে ভাসিয়া ভাসিয়া।
লোচন দাসরে ডিটেনশন ক্যাম্পও রাখসিল নানি।
অয় অয়।
কেউর আর পাঠানি লাগল না।
অয়। হে নিজে নিজেই ভাসিয়া ভাসিয়া গেল।
অয় পুরা পরিবার লইয়া।
হা হা হা হা হা ....
হি-হি-হি-হি-হি-
পাগলা আবার গান ধরেছে -
মন দুঃখে রইলাম গো বসিয়া ...
ঝুমুর পান্ডে। ফেসবুকে থেকে |
2 মন্তব্যসমূহ
শুধু লোচন দাস নয়, গল্পটি আমাকেও ভাসিয়ে নিয়ে গেল। অদ্ভুত সুন্দর অথচ গুটিয়ে রাখা সাপের ফনার মতো। প্রতিবাদী কিন্তু নীরব। এ গল্প শুধু লোচন দাসের নয়। সমকালীন ভারতবর্ষের সমস্ত খেটে খাওয়া গরীব গুরব মানুষের।
উত্তরমুছুনসত্যি এসব মানুষরা কত অসহায়, গ্রামেগঞ্জে এমন কত মানুষ রয়েছে আমাদের চোখের আড়ালে, এমন লেখা পড়লে সেগুলো চোখের সামনে ভাসতে থাকে, সজোরে ধাক্কা দেয়।
উত্তরমুছুন