কবি প্রফুল্ল পালের কবিতা


শুধু মুখের ভাষার জন্য

 

“মন মিলে যায় আজ নীরব রাতে তারায় ভরা ওই গগনের মাঝে।”

 

সে সময় গগনকে খুঁজে পায়নি কেউ

সবার চোখে ধুলো দিয়ে গগন তখন সীমান্তের ওপারে

গগন তখন ফরিদপুরে গগন তখন টাঙ্গাইলে

বনে-বাদাড়ে মাটির পরিখায়, গলায় ‘সোনারবাংলা’

ঝোলায় ‘গীতবিতান, ক্লান্তিতে কখনও কখনও জীবনানন্দ।

গগন তার মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়ার বদলা নিতে

রবীন্দ্রনাথ নজুরুল জীবানন্দ নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল,

গগনের এত তেজ এত সাহস কেউ কখনও আগে দেখেনি,

শুধু মুখের ভাষার জন্য একদিন প্রাণবিসর্জন দিল গগন

সেই ১৯৭১-এ, টাঙ্গাইলে ফরিদপুরে ঢাকা যশোর খুলনায়।

আজও স্বাধীনদেশের পদ্মাতীরে যত আমবাগান

তার মাথার ওপর প্রতিরাতে যে তারাগুলি জ্বলজ্বল করে

তারাই তো গগন গীতবিতান আর জীবনানন্দের 

                                রূপসী বাংলা।

তারায় ভরা নীরব রাত্রিতে গীতবিতান আঁকড়ে আছে গগন

এখনও দেখি আমাদের গগন বাংলা ছেড়ে কোথাও যায়নি

আম-কাঁঠালের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছে 

              শঙ্খচিল শালিখের বেশে।


মূল সূচিতে ফিরে যেতে এখানে ক্লিক করতে হবে

--------------------------------


কবি পরিচিতি


কবি প্রফুল্ল পাল। জন্ম – ৬ এপ্রিল ১৯৫১ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ভদ্রকালী-নায়ায়ণগড়ে। বাবা – মন্মথ নাথ পাল। মা – হেমাঙ্গিনী দেবী।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পেশায় সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মচারী ছিলেন। কম বয়স থেকেই লিখছেন কবিতা। চব্বিশ বছর বয়সে প্রথম কবিতাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল। এখনো পর্যন্ত তেরোটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত। একটি প্রবন্ধগ্রন্থ ‘কবির দিকে কবিতার দিকে’ (২০১৭)।

 

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ

কবিতা আর কবিতা (১৯৭৫)

আবহমান ধ্বংসের ছায়ায় (১৯৮০)

মানুষের ভেতর মানুষ (১৯৯৪)

যৌগিক পাতার রোদ (১৯৯৭)

উৎসর্গপত্রের নীরবতা (২০০০)

সবুজ আলোর জল (২০০০)

উটের গ্রীবায় শীতের ছায়া (২০০৬)

এবং বিষাদ (২০১০)

সকালবাড়ি ও গগন (২০১২)

গগন সমগ্র (২০১২)

তিন পঙ্‌ক্তির ভাত (২০১৭)

গাধা (২০১৮)

লিখি দু-একটি ছায়া (২০১৯)


আপনার মতামত নিচে 
'আপনার মন্তব্য লিখুন' শীর্ষক বক্সে লিখে 
আমাদের জানান। 
লিটল ম্যাগাজিন বেঁচে থাকে 

পাঠকদের মতামতে। 🙏