অমিত মজুমদারের
কবিতাগুচ্ছ
তাহলে তুমি পাচ্ছো সাকুল্যে বারোটা কবিতা
সামনে বিস্তীর্ণ ভুমি, চাইলেই যতদূর খুশি
এক ঢোকে পেয়ে যাবে স্বাধীনতার স্বাদ
তখন তারা দলবদ্ধ শিকারীর মধ্যে
যে নিজের বর্শার যাকেই গাঁথতে পারবে
কিন্তু পেছোতে গিয়ে প্রতিটা শব্দ
প্রাক্তন প্রেমিকাগুচ্ছ
তাকে লেখচিত্রে দু চার পা হাঁটা শেখানো মানে
জানালায় রোদ আনতে
মেঘে জলে সাময়িক বিরতি নেয় নির্লোভ কারুবাসনা
এই যে অণু পরমাণু বিষয়ক সামাজিক কর্মশালা
সেখানে হাতুড়ি পিটলেই ছিটকে আসে না ইলেকট্রন
সেই মানুষটা বারে বারে কান পাতে
ভেতরে ভেতরে প্রেমিকাগুচ্ছ ক্রমশই
আর তখনই দরজাটা মন খারাপ করে চৌকাঠ
যেমন জানে না একটা দ্বীপ
নদীর স্রোত মাপতে নেমে আর উঠে আসেনি
দুপাশে গ্রাম নেই বলে কোনো নৌকো দাঁড়ায় না
তারা পরবর্তী প্রজন্মের হাতে সেসব ধরিয়ে গেছে
প্রজন্ম জানে এই দলিল একদিন
কেউ কাউকে দেখেনি
তৈরী হলো পথ
আশ্চর্যের ব্যাপার কেউই অনুসরণ করলো না তাঁকে
পায়ের স্পর্শ না পেয়ে আবার অরণ্য গজিয়ে উঠলো।
পেছন ফিরে তীব্র অভিশাপ দিলেন নির্বোধ অরণ্যকে
অরণ্য গুটিয়ে যেতেই সেখানে
ঈশ্বরের সেই পথ এখন কেউ
না ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিলি রাত
দীর্ঘ উপোস কমেন্ট পেয়েও দেখি
শ্রীখণ্ডে তোর অবাধ যাতায়াত।
গলায় বাঁধা ঘণ্টা নাড়ে জিভ
তিন নয়নের অশ্রুগ্রন্থি নিয়েই
মরণ পর্বে একলা বেঁচে শিব।
জলের দরে আদ্যিকালের পাপ
ত্রিশূল দেখে কাঁপতে থাকা রুমাল
মুছিয়ে দিচ্ছে সকল অভিশাপ।
পুরুষ পুরুষ মন্ত্র পড়ে জল
গা’য় ছিটিয়ে ধর্ম প্রকট হলেই
সাক্ষী থাকে স্তব্ধ মফস্বল।
পর্দা তুলে মারতে এলি চোখ
খণ্ড খণ্ড ঋণের বোঝা নিয়ে
তোর দুচোখে নয়ানজুলি হোক।
ভ্রমণ
তোমাকে পাহাড় ভেবে গিলি। টান ছাড়ো
দুখানা আঁচড় টেনে পরাজিত খুলি
ভ্রমণ পিয়াসী মুখে ওড়ে খোকা খুকি
আগে তো আসুক চিঠি ফাঁকা ডাকঘরে
মাটিতে রেখেছি দেহ লোহাতে পারিনি
নিশিকে মধুর লাগে আলো খাসা হলে
শিকড়ে মুকুট দেখে নখে টানে জানি
বারো ঘর পেরিয়েছি এক উঠোনেতে। 🚫
মূল সূচিতে ফিরে যেতে এখানে ক্লিক করতে হবে
-----------------------------------
লেখক পরিচিতি
জন্ম ১৯৮০ সালে নদিয়া জেলার বেথুয়াডহরিতে। পিতা অরুণকুমার মজুমদার মাতা অলকা মজুমদার। বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক হলেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলচ্চিত্রবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করেছেন। কিছুদিন সাংবাদিকতা ও বাংলা মেগা সিরিয়ালের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করলেও বর্তমানে একটা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। ২০০০ সাল থেকে কবিতা, ছড়া, ছোটো গল্প, প্রবন্ধ লিখছেন। বেথুয়াডহরি থেকে প্রকাশিত 'ঝড়' দেয়াল পত্রিকাতে প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। এরপরে অলিন্দ, ফিনিক্স, কথাকৃতি, আবাদ, অভিব্যক্তি, সৃষ্টির একুশ শতক, নতুন কবি সম্মেলন, উত্তরবঙ্গ সংবাদ, জ্বলদর্চি ছোটোবেলা, পরম্পরা, অভয়া প্রভৃতি পত্রিকায় কবিতা, ছোটো গল্প, প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্য পাঠ, গান শোনা ও নানা ধরণের চলচ্চিত্র দেখতে খুবই ভালোবাসেন। আর ভালোবাসেন মানুষের সঙ্গে মিশতে। এখনো পর্যন্ত প্রকাশিত দুটি কাব্যগ্রন্থ ‘হাত দুটো ছুঁতে দে’ (২০১৯) ও ‘বান্ধবীরা ম্যাজিক জানে’ (২০২০) প্রকাশিত হয়েছে 'কথাকৃতি' থেকে।
1 মন্তব্যসমূহ
khub bhalo laglo kabitagulo
উত্তরমুছুন