ধারাবাহিক 

অনুবাদে শেক্সপীয়র সনেটগুচ্ছ

একটি সশ্রদ্ধ প্রয়াস

বিনয়েন্দ্র নাথ রায়

সনেট ৯৪, ৯৫ এবং ৯৬

(94)

They that have pow'r to hurt, and will do none,
That do not do the thing they most do show,
Who, moving others, are themselves as stone,
Unmoved, cold, and to temptation slow -

 They rightly do inherit haeaven's graces,
And husband nature's riches from expense;
They are the lords and owners of their faces,
Others but stewards of their excellence.
 
The summer's flow'r is to the summer sweet,
Though to itself it only live and die,
But if that flow'r with base infection meet,
The basest weed outbraves his dignity:
            
For sweetest things turn sourest by their deeds;
Lilies that fester smell far worse than weeds.

(৯৪)

আঘাতের শক্তি ধরে, তবু যারা কাটেনা আঁচড়
বিরত সে কাজে যাতে স্পষ্টতই আছে সক্ষমতা
অপরকে নাড়া দিয়ে, নিজে যারা যেন বা পাথর
অবিচল ও শীতল, প্রলোভনে ধীর মন্থরতা


উত্তরাধিকারী তারা যথার্থই দিব্য লাবণ্যের,
মিতব্যয়ে প্রকৃতির ঐশ্বর্যের রোখে অপচয়,
প্রভু ওরা, অধীশ্বর ওদের সে নিজস্ব মুখের
অন্যেরা গোমস্তা মাত্র যে উৎকর্ষে ওরা ঋদ্ধিময়।


বসন্তের ফুল সেতো মধুময় বসন্তের কাছে
স্বয়ং নিজেরই কাছে সে কেবল বাঁচে আর মরে
তবে সে ফুলেও হলে সংক্রমণ জঘন্য ছোঁয়াচে
নিকৃষ্ট আগাছা তার মর্যাদাকে অতিক্রম করে।


সবচেয়ে মধুরও তো নিজকর্মে অম্ল বনে যায়
পচাপদ্ম আগাছার চেয়ে ঢের দুর্গন্ধ ছড়ায়।

(95)

How sweet and lovely dost thou make the shame
Which, like a canker in the fragrant rose,
Doth spot the beauty of thy budding name!
O in what sweets dost thou thy sins inclose!

 That tongue that tells the story of thy days
(Making lascivious comments on thy sport)
Cannot dispraise, but in a kind of praise,
Naming thy name, blesses an ill report.
 
O what a mansion have those vices got 
Which for their habitation chose out thee,
Where beauty's veil doth cover every blot,
And all things turns to fair that eyes can see!
            
Take heed (dear heart) of this large privilege:
The hardest knife ill used doth lose his edge.


(৯৫)

লজ্জাকেও মধুময় অপরূপ করো তুমি কত
যা কীটের মতো থেকে সুরভিত গোলাপে নিহিত
তোমার উদ্ভিন্ন নামে এঁকে দেয় বিচ্যুতির ক্ষত
সে কোন মাধুর্যে করো যত পাপ সকলই আবৃত


কীভাবে কাটাও দিন সে কাহিনী বলে যে কথক
লাস্যময় ভাষ্য জুড়ে তোমার ও প্রণয়লীলার
করে না সে নিন্দে তত, মনে হয় যেন দিয়ে স্তোক
তোমার নামের গুণে মাঙ্গলিক গায় কুৎসার

আহা  কী যে সৌধ এক পেয়ে গেছে সে সব স্খলন
তোমাকে বেছেছে যারা নিজেদের আবাসন করে
যেখানে প্রতিটি দোষে সৌন্দর্যের অবগুন্ঠন
রমনীয় হয়ে ওঠে সবকিছু যা পরে নজরে।

অমেয় এ অধিকার, মনে রেখো, হে বন্ধু, একথা
অপব্যবহারে নষ্ট পোক্ততম ছুরিরও তীক্ষ্ণতা।


(96)

Some say thy fault is youth, some wantonness,
Some say thy grace is youth and gentle sport;
Both grace and faults are loved of more and less:
Thou mak'st faults graces that to thee resort.

 As on the finger of a throned queen
The basest jewel will be well esteemed,
So are those errors that in thee are seen
To truths translated, and for true things deemed.
 
How many lambs might the stern wolf betray,
If like a lamb he could his looks translate!
How many gazers mightst thou lead away,
If thou wouldst use the strength of all thy state!

          
But do not so; I love thee in such sort,
As thou being mine, mine is thy good report.

(৯৬)

যৌবন তোমার দোষ কেউ বলে, কেউ ব্যাভিচার
কেউ বলে লাবণ্য তো  যৌবন-বিলাস বনেদীর
লাবণ্য ও দোষে প্রেম ছোটো বড় রয়েছে সবার
নিহিত লাবণ্যে তুমি নবরূপ দাও বিচ্যুতির


সিংহাসনে অধিষ্ঠিত সম্রাজ্ঞীর আঙুলে যেমন
তুচ্ছতম মুক্তোকেও মনে হয় মহামূল্যবান
তেমনি তোমার যত দোষ করে নজর হরণ
লাবণ্যের রূপ ধরে পায় খাঁটি জিনিসের মান 

নৃশংস নেকড়ে পারে কত কচি ভেড়াকে ভোলাতে
কোনোমতে বাইরেটা যদি ভেড়া করে নিতে পারে
কত দৃষ্টি-কাঙালকে নিয়ে যেতে তুমি অধঃপতে
রাজসিক শক্তি সব লাগালে নিপুণ ব্যবহারে

এমন করোনা মোটে ভালোবাসি এতোই তোমাকে
তুমি তো আমিই তাই সুনামে আমারো ভাগ থাকে।


(একটি উল্লেখযোগ্য তথ্যঃ এই সনেটটি অর্থাৎ ৯৬ তম সনেটটির শেষ দুটি চরণ এবং  ৩৬ তম সনেটটির শেষ দুটি চরণ একই।)
(ক্রমশ)

সাইন্যাপস্‌ পত্রিকার ওয়েব সংখ্যায় এর আগে প্রকাশিত সনেটগুলির অনুবাদ পড়তে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে 👇




বিনয়েন্দ্র নাথ রায়


অনুবাদক পরিচিতি

ইংরাজি সাহিত্যের প্রাক্তন অধ্যাপক। বিশিষ্ট কবি এবং অনুবাদক। দীর্ঘকাল ধরে শেক্সপীয়রের সনেটগুলির অনুবাদ করে চলেছেন। সাইন্যাপস্‌ পত্রিকাতেই  প্রথম প্রকাশিত হয় সনেটের এই অনুবাদ্গুলি। 'সাইন্যাপস্‌ পত্রিকা' তখন 'সাইন্যাপস্‌' নামে মুদ্রিত হত। সেই সাইন্যাপস্‌ পত্রিকার ১৯৯৯ সালের জুলাই সংখ্যাটি থেকে সনেটগুলির অনুবাদ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে এবং এখনো হয়ে চলেছে। এরই মধ্যে ২০০৫ সালে প্রথম থেকে ৫২ তম সনেটের অনুবাদ 'শেক্সপীয়রের সনেট' এই নামে গ্রন্থিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। বর্তমানে এটি উপলব্ধ নেই। 
    শ্রী বিনয়েন্দ্র নাথ রায় ধারাবাহিকভাবে অনুদিত সনেটগুলির পরিমার্জনাও করে চলেছেন। যার ফলে পত্রিকায় প্রকাশিত সনেটগুলির পরিবর্তবন ঘটেছে গ্রন্থে আবার গ্রন্থের সনেটগুলিও পুনরায় পরিমার্জিত হয়েছে। সাইন্যাপস্‌ পত্রিকা সেইজন্য সনেটগুলির ক্রম শেষ হলে আবার প্রথম সনেট থেকে প্রকাশ করার পরিকল্পনা নিয়েছে।

আপনার মতামত নিচে 
'আপনার মন্তব্য লিখুন' শীর্ষক বক্সে লিখে 
আমাদের জানান। 
লিটল ম্যাগাজিন বেঁচে থাকে 
পাঠকদের মতামতে। 🙏